নবান্ন
আবু হেনা ইকবাল আহমেদ১
ক.
বলদের মতো খেটে সারা দিনমান
এশা পড়ে ঘুম দেই গা তুলি ফজরে
ভোমরায় ফসলের কানে গায় গান
শুনে ওরা বেড়ে ওঠে তর তর করে।
বাড়ন্ত ফসল দেখে জুড়ে যায় প্রাণ
তবু ভয়ে কাঁপে বুক অকালের ঝড়ে
কখন না একেবারে নাশে পাকাধান
আশার কপালে ছাই যেন তা না পড়ে!
অঘ্রাণের নবান্নের ঘ্রাণ পাই নাকে
গিন্নির সময় যায় গোলা মেরামতে
কল্পনারা ডানা মেলে কতো ছবি আঁকে
প্রবাসী সজন ছোটে ঘরমুখী পথে।
চারিদিকে ধুম পড়ে নবান্ন বরণে
কেউ কেউ স্মৃতি ঘাঁটে অতীত স্মরণে \
খ.
চারপাশে হইচই অঘ্রাণের ভোরে
নবান্নের উৎসবে চঞ্চলা শৈশব
বড়রাও মেতে আছে অঘ্রাণের ঘোরে
মিষ্টান্নের গন্ধ শুঁকে মৌতাত যে সব।
নতুন ধানের পাঁজা দেবার উৎসব
যার জমি নাই সেও নেই বসে ঘরে
মাঠে ছুটে ধানকেটে করে অনুভব
ঘরে ঘরে পিঠা শিন্নি আদিকাল ধরে।
গরু নাই বটে তবে মাড়াই ঝাড়াই
ছাঁটাই কলে হয় ঢেঁকি গেছে ওঠে
আতপ চালের গুঁড়ি কলেই বানাই।
শিশুরা হল্লায় মাতে কিশোরেরা ছোটে।
মেয়েরা সবাই ব্যস্ত পিঠাপুলি বেলে
অঘ্রাণ জোয়ার আনে স্বপ্ন ডানা মেলে \
নবান্নের ঘ্রাণে
অনুকুল বিশ্বাস
সোনা রঙে সোনালী ধানে
ভরে গেছে মাঠ,
খুশির জোয়ার ঘরে ঘরে
বসেছে চাঁদের হাট।
শীষে শীষে জড়াজড়ি
বাতাসে দুলে দুলে,
শত কষ্টের শস্য সম্ভার
দেখি নয়ন খুলে।
মাঠ মেতেছে মন মেতেছে
ধান কাটার মেলা,
নাওয়া খাওয়ার নেই সময়
শেষ হয়েছে বেলা।
কৃষক বধূ উঠান ছাঁটাই
পথের পানে চেয়ে,
ধানের বোঝা মাথায় নিয়ে
ফিরবে পরান প্রিয়ে।
ছাড়াই মাড়াই শেষ করে
ভরবে ধানের গোলা,
মনের মতো কেনা-কিনি
শুরু সুখের পালা।
নুতন ধানের পিঠা পুলি
নবান্নের ঘ্রাণে ঘ্রাণে,
সুখ শান্তি ভরে থাকুক
সবার প্রাণে প্রাণে।
কৃষিবিদ পরিচালক (অব.), বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী, কৃষি মন্ত্রণালয়, সেল : ০১৬১৪৪৪৬১১১ ahiqbal.ahmed@yahoo.com ‘কলমিলতা # ৪, এলেনবাড়ি গভ. অফিসার্স কোয়াটার্স, তেজগাঁ, ঢাকা-১২১৫, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি অফিস, হরিণাকুণ্ডু, ঝিনাইদহ, মোবা : ০১৭১৭৮১২০৫৪